দ্রুত ঘুমানোর ১০টি কৌশল
একজন মানুষের সুস্থ থাকার অন্যতম নিরাময় হল ঘুম। স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের।প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে,তার স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। তবে বয়স অনুযায়ী ঘুমের চাহিদাও বিভিন্ন হয়। একজন সাধারণত পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৭ থেকে ৮ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন,শিশুদের ৯ থেকে ১৩ ঘণ্টা ঘুমানোর প্রয়োজন,এবং নবজাতক বাচ্চাদের ১২ থেকে ১৭ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন।
একজন মানুষের ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরের অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ঘুমের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে,টক্সিন নামক পদার্থ বের হয়ে যায়/এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
সুতরাংএকজন মানুষের পরবর্তী দিনের শক্তি ও দক্ষতার অনেকটাই নির্ভর করে তার পর্যাপ্ত ঘুমের ওপর।
রাতে ঘুম না আসা বা আসলেও বারবার ভেঙ্গে যাওয়াকে বলা হয়,অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া। অনিদ্রার ফলে দিনের বেলা ঘুমোনো, সারাদিন ঝিমুনি ভাব, কাজে অমনোযোগী হওয়া।সারাদিন মেজাজ খিটখিটে ও বিষণ্ণ হয়ে থাকার মত ঘটনা ঘটতে পারে। রাতের বেলা না ঘুমানোর ফলে সারাদিন মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই অনিদ্রা হতে পারে। তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ঘুমের হার কমে যায় বা ঘুম পাতলা হয়ে যায়। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তির কারণে অনিদ্রা রোগে ভুগেন।এই সমস্যা বর্তমানে এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে অনিদ্রাকে দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে।
১/ বিছানা থেকে উঠে যান ।
অনেকেই আছেন যাঁরা ঘুম না এলেও ঘুম আসার জন্য বিছানার বিছানায় শুয়ে থাকেন।বিশেষজ্ঞরা বলছেন ঘুম না এলে বিছানার এপাশ ওপাশ ঘুরা ঘুরি না করে বিছানা থেকে ওঠে যান।যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার ঘুম না আসে ততক্ষন পর্যন্ত আপনি বিছানায় আসবেন না।ঘুমানোর আগে শরীরকে ক্লান্ত করে নিন।এবং আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।ৎ]
২/গরম পানিতে গোসল ।
রাতের বেলা ঘুম না আসলে হালকা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। গরম পানি দিয়ে গোসল করার ফলে,শরীর শিথিল হয় এবং ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
৩/ক্যাফেইন এড়িয়ে যান
ক্যাফেইন-জাতীয় খাবার আমাদের ঘুমকে তাড়িয়ে দেয়। তাই ঘুমানোর ৫-৬ঘন্টা আগে চা বা কফি পান করুন। বিশেষজ্ঞরা বলেন,যাঁদের ঘুম ঠিকমতো না হওয়ার সমস্যা রয়েছে,তাঁদের দুপুরের খাবারের পর চা বা কফি না খাওয়াই ভালো।
৪/ ধ্যান
ঘুম আসার একটি চমৎকার এবং কার্যকর মাধ্যম হলো,মেডিটেশন বা ধ্যান। ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়,ধ্যান বা মেডিটেশন ঘুমের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে,এবং আমাদের শরীরকে শিথিল করে। এ ছাড়াও ধ্যানের সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে তাড়াতাড়ি ঘুম আসতে অনেক বেশী সাহায্য করে।
৫/যোগব্যায়াম
আমাদের পোরু বিশ্বেয় ! যোগ ব্যায়াম ভালো ঘুম হওয়ার জন্য একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায়ের নাম। যোগ ব্যায়াম শিথিল রাখে শরীরকে ! এবং আমাদের ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করে।
৬/ শারীরিক পরিশ্রম
শারীরিক পরিশ্রম ঘুম আসার কার্যকর এবং প্রাকৃতিক ওষুধ। বিশেষজ্ঞরা বলেন, যাঁরা শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাঁদের ঘুম ভালো হয়। শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্লান্ত থাকে। তাই ভালো ঘুমের জন্য শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা।
৭/ অ্যারোমা থেরাপি
অ্যারোমা থেরাপিতে যে প্রয়োজনীয় ভেষজ তেল,চোখের মাস্ক,বাথ স্ক্রার, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো আমাদের ভালো ঘুম হতে বেশ উপকারী। অ্যারোমা থেরাপি সর্ম্পকে ২০০৫ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়, অ্যারোমা থেরাপিতে যে ভেসজ তেল ব্যবহার করা হয় সেই তেলের ঘ্রাণ গভীর ঘুমের জন্য বেশ উপকারী। তাই যাদের ঘুম না হওয়ার সমস্যা রয়েছে, তাঁরা পার্লারে গিয়ে অ্যারোমা থেরাপি নিয়ে দেখতে পারেন।
৮/ভেষজ চা
ঘুমের আগে কফি বা চা খাওয়া যাবে না, তবে ক্যাফেইন ছাড়া কফিবা চা খেতে পারেন। ঘুমানোর আগে ভ্যালেরিয়ান অথবা ক্যামোমিল চা খেতে পারেন। এগুলো আপনার ঘুম ভালো করতে সাহায্য করবে।
৯/ প্রোগ্রেসিভ মাসেল রিলাক্সেন ব্যায়াম
প্রোগ্রেসিভ মাসেল রিলাক্সেন ব্যায়াম ১৯১৫ সালে আবিষ্কার হয়,ব্যায়ামের এই পদ্ধতি এখনো পুরোনো হয়নি। এটি এমন একধরনের ব্যায়াম যা পেশিকে শিথিল করে তুলে। এটি আমাদের অবসন্নতা দূর করে ঘুমের পরিমাণ বাড়ায়।
১০/ শোবার ঘর
ভালো ঘুমের জন্য শোবার ঘর হতে হবে পারফেক্ট। আপনার এমন ঘরে ঘুমানো যাবে না, যার আশপাশে অনেক শব্দ হয় বা প্রচুর আলো এসে পড়ে। এগুলো ঘুমকে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই শোবার ঘরের কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। কী কী পরিবর্তন করলে আপনার শোবার ঘরটি ঘুমের উপযুক্ত হবে? এ ছাড়াও আপনি যদি ভালো ঘুম চান ? তাহলে ঘুমের জন্য মোবাইল, টেলিভিশন ,কম্পিউটার ইত্যাদি এসব জিনিস গুলোকে আপনার শোবার যায়গা থেকে একটু দূরে রাখুন। কেননা এগুলোও ভালো ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
প্রযুক্তি মেলার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url